//azoaltou.com/afu.php?zoneid=3651748 //azoaltou.com/afu.php?zoneid=3683887
top of page
Search

তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর বিনোদনের নিয়ন্ত্রক শক্তি কারা ? -- জানালেন

নীতিপুলিশি না রাজনীতি ?




ওভার দ্য টপ ( Over the top/OTT) মিডিয়া সার্ভিস। সাম্প্রতিককালে বিপুল পরিমাণে আলোচিত এক মাধ্যম। কি এই সার্ভিস, না, যেখানে কেবল, ব্রডকাস্ট বা স্যাটেলাইট টেলিভিশন প্ল্যাটফর্মের চিরাচরিত ব্যাবস্থা ছাড়াই সরাসরি ইন্টারনেটের মাধ্যমে দর্শক দরবারে পৌঁছে যাওয়া সম্ভব। নেটফ্লিক্স, আমাজন প্রাইম, ডিজনি হটস্টার, সোনি লিভ, হইচই থেকে ফেসবুক বা ইউটিউব চ্যানেল এভাবেই কোটি কোটি দর্শকের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করছে। তথ্যপ্রযুক্তির এই দুনিয়ার সঙ্গে আমাদের পরিচয় ঘটে যাওয়ার পর কেটে গেছে বেশ কয়েকটি দিন। জেন ওয়াই থেকে তাদের 'দাদু'প্রজন্ম সকলেই এই পরিষেবার উপভোক্তা আজ।


এই পর্যন্ত পুরোটাই কালের ও প্রযুক্তির গতি-প্রকৃতির নিয়মে চলমান একটি অধ্যায়। বেশ কয়েকটি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সংস্থা তাদের পসরা নিয়ে বিনোদন বাজারে বিকিকিনির জন্য হাজির। উপভোক্তারাও খুশি এবং তৃপ্ত। উপাচারে রয়েছে সিরিজ, সিনেমা, সিটকম, চ্যাট শো, মিউজিক বা ডান্স ইত্যাদির আয়োজন। মোদ্দা কথা মনোরঞ্জনের বিপুল সম্ভার। ভাষার দিক থেকে তাদের সামনে প্রচুর অপশন---বাংলা, হিন্দি থেকে দেশের প্রায় সব ভাষা এবং ইংরেজিতে প্রচারিত অনুষ্ঠান। ইংরেজি অর্থাৎ, তার মাধ্যমে আবার সারা বিশ্বের আরও অনেক ভাষার শো। সেসবের কিছু নতুন করে এই নয়া মাধ্যমে স্ট্রিমিংয়ের জন্যই বানানো। কিছু পুরোনো টিভি সিরিজ। নতুন ও পুরোনো সিনেমা। সব মিলিয়ে দর্শকের প্রাপ্তি পরিপূর্ণ।


তাহলে সমস্যাটা কোথায় ? হঠাৎ করে এই স্ট্রিমিংয়ের উপকরণ বা বিষয়বস্তু নিয়ে খবরের বাজার এত গরম কেন ? কেনই বা এই আইনি কোন্দল বা নতুন আইনের প্রবর্তন। হ্যাঁ, একথা আজ সবারই জানা, এবছর ফেব্রুয়ারিতেই কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ প্রবর্তিত নতুন Intermediary Guidelines and Digital Media Ethics Code আদতে OTT মাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল ছাড়া আর কিছু নয়।



আমাজন প্রাইমে প্রদর্শিত 'তাণ্ডব' সিরিজ নিয়ে বিষয়টি তুঙ্গে উঠলেও তলে তলে এই নীতিপুলিশির আইনি চক্কর চলছিল বহু আগে থেকেই। হঠাৎ হঠাৎ কোনও একটি সিরিজ বা সিনেমা নিয়ে সমাজের রামা-শ্যামা থেকে সেলিব্রিটিকুল হয় টুইট করে প্রতিবাদ জানাচ্ছে বা আদালতে মামলা ঠুকে দিচ্ছে, এমনটা অহরহ শোনা যাচ্ছিল। তাদের অভিযোগ, এমন কিছু এই মাধ্যমে স্ট্রিমিং হচ্ছে, যা সমাজের পক্ষে হানিকারক। ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন, নারী নির্যাতন, নারী ও শিশুপাচার এসবে সমাজের এযাবৎকাল কোনও ক্ষতি হয়নি। কিছু প্রাপ্তবয়স্ক সিরিজ, প্রাপ্তবয়স্ক দর্শক দেখলেই সমাজ অধঃপাতে চলে যাওয়ার এই থিওরি স্বার্থান্বেষী কিছু মানুষ বানায়। আর দুর্ভাগ্যজনক ভাবে এই একবিংশ শতকেও তাদের প্রচুর অনুগামীও জুটে যায়।


এই অনুগামীরা প্রকাশ্য রাস্তা থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার অলিগলি কাঁপিয়ে হুঙ্কার ছাড়ে। 'তাণ্ডব'-এর ক্ষেত্রে এ ঘটনা মারাত্মক আকারে ঘটেছে। এর আগে 'স্যাক্রেড গেমস', 'মির্জাপুর' বা 'দিল্লি ক্রাইম', 'লাইলা' ইত্যাদি নিয়ে গুঞ্জন ছিল। সেই মৃদু গুঞ্জন আজ গর্জনে পরিণত। সত্যি বলতে কি, বিরুদ্ধবাদীদের জনসমর্থন আইনের ধারকবাহকদের সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেছে, না, আইনের থুড়ি সমাজের রক্ষকরাই নিবিষ্টভাবে এই জনসমর্থন তৈরি করেছে, তা নিয়েও ধন্দ আছে।



মজা হলো, এদেশে আইন সমাজকে না সমাজ আইনকে নিয়ন্ত্রণ করে বা করবে, তা নিয়ে গোড়া থেকেই ধারণাটা যথেষ্ট স্বচ্ছ নয়। এতদিন এই অস্বচ্ছ ধারণা বা প্রক্রিয়ার মধ্যেও কিছুটা স্বাধীন, উদার, মুক্তচিন্তার গমনাগমন ছিল। বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রে তার রূপরেখা দেখেছি আমরা। প্রসার ভারতীর আনুকূল্যে বড় ও ছোটপর্দায় আগেই মুক্তচিন্তা প্রতিহত করার তীব্র চেষ্টা দেখা গেছে। সেখানে সরকারি নিয়ন্ত্রণ আজ স্পষ্ট। বাকি ছিল স্ট্রিমিং, অর্থাৎ OTT মাধ্যম। এবার সেখানেও সেন্সরের কাঁচি। সমাজের কে কি দেখবে, সেটা এখন ঠিক করবে কর্তৃপক্ষ।



গত কয়েকবছর ধরে এদেশে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করছে যে শক্তি, তারা নিছক গোঁড়া বা রক্ষণশীল নয়। এটা তাদের বাইরের আবরণ মাত্র। আসলে তারা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থে, নিজেদের শক্তি জাহির করার উদ্দেশে সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে। OTT স্ট্রিমিংয়ে বিষয় নির্বাচন বা পরিবেশন পদ্ধতিতে তাদের নাক গলানোর ব্যাপারটাও তাই। এর ফলে বেশ কিছু ভালো সিরিজ বা সিনেমা দর্শন থেকে বঞ্চিত হবে ভারতীয় দর্শক। ইতিমধ্যেই কাঁচি চালিয়ে 'তান্ডব'-কে যে চেহারা দিতে বাধ্য হয়েছে নির্মাতারা, তা কহতব্য নয়।


প্রসঙ্গত, 'তান্ডব' নিয়ে এত জ্বালাপোড়ার কারণ বুঝতে রকেট সায়েন্স পড়ার দরকার পড়ে না। কেন্দ্রীয় সরকার যে কোনও উদারপন্থী ভাবনাকেই শত্রুজ্ঞানে দেখে, একথা আজ সর্বজনবিদিত। বিরুদ্ধাচরণ বরদাস্ত করা হয় না। প্রতিবাদ করতে গিয়ে বহু সৎ, সাহসী সাংবাদিক হয় মৃত, নয় ভীত। মেনস্ট্রিম মিডিয়ার পর এখন OTT-র ওপরেও নেমে আসছে নিয়ন্ত্রণের খাঁড়া।



নির্মাতা, নির্দেশক, স্পনসরদের একটি বিরাট শ্রেণী এই মুহূর্তে দুশ্চিন্তায়। সে সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী যতই বলুন, নতুন Intermediary Guidelines and Digital Media Ethics CodeIntermediary Guidelines and Digital Media Ethics Code

আইনকে সরকারপক্ষের মতোই OTT মাধ্যমও স্বাগত জানিয়েছে। শোনা যাচ্ছে, তেতোর ওপর মধু মাখানোর মতো কিছু বিবেচ্য বিষয় আলোচনাস্তরে রেখে দেওয়া হয়েছে এরপরও। কিন্তু যেখানে খোদ দেশের সুপ্রিম কোর্ট বলছে, এই সিরিজগুলির মধ্যে বহুজায়গায় এমন দৃশ্য রয়েছে, যা পর্নোগ্রাফির সমতুল্য। সেখানে কি সমঝোতা হতে পারে, বোঝাই যায়। যেটা হলো মাঝখান থেকে, অনেকেরই নির্মিত সিনেমা বা সিরিজগুলি আর প্রদর্শিত হবে কিনা, প্রশ্নের মুখে। তাঁরা তো তথাকথিত ওই 'পর্নো'দৃশ্য রেখেই সিরিজগুলি বানিয়েছেন।



সবশেষে নিন্দুকেরা যা বলছে, এই কান্ড নিছক নীতিপুলিশি নয়। এক সম্রাটের বিশাল সিন্দুকে ভারতের অর্থনীতি থেকে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যাবস্থার চাবিকাঠি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় তুলে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে স্ট্রিমিংয়ের দুনিয়াতেও তাদেরই একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করার প্রস্তাবনা নয় তো এই নিয়ন্ত্রণ ?!





Make a Donation



A/C: 40910100004585



IFSC Code:BARB0BUDGEB



Bank Name: Bank Of Baroda



Name in Bank: BHAAN


 
 
 

Comments


Subscribe to Site

Thanks for submitting!

© 2020 Bhaan Theatre | Designed by Capturegraphics.in
bottom of page