থ্রিলার প্রেমি দর্শকদের মুগ্ধ করে ' মেয়ার অফ ইস্টটাউন' জানালেন-অজন্তা সিনহা
- Sneha Roy
- Aug 3, 2021
- 2 min read
Updated: Aug 4, 2021

ডিটেকটিভ মেয়ারের চরিত্রে দুরন্ত কেট
এইচবিও-র ক্রাইম ড্রামামেয়ার অফ ইস্টটাউন

সহ অভিনেতা গাই পিয়ার্সের সঙ্গে একটি ঘনিষ্ঠ যৌন দৃশ্যে অভিনয় করতে হবে
তাঁকে। এদিকে চেহারায় বেশ বয়সের ছাপ পড়ে গেছে কেট উইন্সলেটের! চর্বি জমেছে
শরীরের কোনও কোনও অংশে। পরিচালক ক্রেগ জোবেলের প্রস্তাব ছিল এই
দৃশ্যটির যেখানে যেখানে কেটের পেটে চর্বি থাকায় কিছুটা দৃষ্টিকটু দেখাচ্ছে সেই
অংশগুলি বাদ দেওয়া যেতে পারে। এর জবাবে কেটের সটান জবাব একেবারেই না।
এটা করার কথা ভাবার সাহসই কোরো না ,সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক টাইমস;কে দেওয়া
এক সাক্ষাৎকারে একথা জানিয়েছেন কেট স্বয়ং।
এইচবিও-তে প্রদর্শিত সাম্প্রতিক সিরিজ ;মেয়ার অফ ইস্টটাউন (Mare of
Easttown) নিয়ে কথা বলতে গিয়ে যথার্থই বিরক্তি প্রকাশ করে কেট বলেছেন,
আমার চরিত্রটিকে পর্দায় আকর্ষণীয় দেখাবার ক্ষেত্রে বারবার চেষ্টা চালিয়ে
গেছে ওরা। প্রতিবারই আমার জবাব ছিল না বলা বাহুল্য, কেটের শর্তেই তাঁকে
দিয়ে কাজটা করাতে হয়েছে ক্রেগকে। সেটাই তো হওয়ার ! কারণ অভিনয়ের ক্ষেত্রে
যে অপরিহার্য তিনি! সেখানে কোথাও সমঝোতা করেন না এই অস্কারজয়ী অভিনেতা।
পরিচালকও জানেন চরিত্রটিতে তাঁর বিকল্প নেই। অন্যদিকে চরিত্রের প্রয়োজনেই
আপসহীন কেট। মাঝবয়সী মেরিয়ান শিহানের চেহারা যেমনটা হওয়া উচিত তেমন
ভাবেই দর্শকের সামনে নিজেকে হাজির করতে চেয়েছেন তিনি। কোনও বাড়তি রং নয়।
নয় চেহারার তথাকথিত ত্রুটি লুকোবার চেষ্টা ! এটাও ঠিক, চরিত্রের প্রয়োজনে
কখনও যদি তাঁকে এর উল্টোটা করতে হয় সেটাই করবেন কেট। তাঁর ট্র্যাক রেকর্ড
তো একথাই বলে।

বস্তুত, ৭ পর্বের এই আমেরিকান ক্রাইম ড্রামার অনেকটাই দাঁড়িয়ে কেট
উইন্সলেটের অভিনয়ের ওপর। কাহিনি ও নির্মাণ ব্র্যাড ইনগেলসবি। গল্প
এইরকম, ফিলাডেলফিয়ার কাছে এক শহরতলি। সেখানেই ডিটেকটিভ মেরিয়ান ওরফে
মেয়ার এক তরুণীর খুনের তদন্ত করছে। এই খুনেরও এক পূর্ব ইতিহাস আছে।
এমনই আর একটি খুন যার সমাধানে সেদিন ব্যর্থ হয়েছিল মেয়ার। যার স্মৃতি আজও
তাড়া করে বেড়ায় মেয়ারকে। প্রসঙ্গত, মেয়ার একদা বাস্কেটবল চ্যাম্পিয়ন। সেই
হিসেবে এলাকার হিরো ছিল সে। তবে সে তো পঁচিশ বছর আগের কথা। সেই পুরোনো
খুনের ঘটনার সূত্রেই এলাকায় জনপ্রিয়তা হারায় আজকের কড়া ও কাজপাগল

ডিটেকটিভ মেয়ার। এদিকে আজকাল মেয়ারের ব্যক্তিগত জীবনও নানা কারণে
জর্জরিত। ডিভোর্স, ছেলের আত্মহত্যা এবং ছেলের বউয়ের সঙ্গে নাতির কাস্টডি
নিয়ে আইনি লড়াই। ছেলের বউয়ের আবার একটি মাদকাসক্ত অতীত রয়েছে।
যাবতীয় প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে কীভাবে দাঁড়াবে মেয়ার তাই নিয়েই টানটান গতিতে
এগিয়েছে এই সিরিজ। এবছর এপ্রিলে এই ওয়েবসিরিজ প্রিমিয়ার হওয়ার পর থেকেই
দর্শকমহলে দারুণ সাড়া ফেলে দিয়েছে। বলা বাহুল্য, সারা বিশ্বের কেটভক্তরা
আরও একবার তাঁর কামাল করা অভিনয় দেখে উদ্বেলিত। অভিনয়ে অন্যান্যদের
মধ্যে আছেন জুলিয়েন নিকলসন, জিন স্মার্ট, অ্যাঙ্গরি রাইস, ডেভিড ডেনম্যান,
নিল হাফ, গাই পিয়ার্স, ক্যালি স্পেনি, জন ডগলাস থমসন, জো টিপেট, ইভান
পিটার্স, সসি বেকন, জেমস ম্যাকারডেল। প্রসঙ্গত, ৭টি পর্বই পরিচালনা করেছেন
ক্রেগ জোবেল।

ওয়েবসিরিজের ক্ষেত্রে বরাবরই ক্রাইম থ্রিলারের রমরমা। ওটিটি চিত্রকল্পের
প্ল্যাটফর্ম জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অপরাধীর দল। আর তাদের হন্যে হয়ে দমনের
চেষ্টায় পুলিশ ও ডিটেকটিভ। অপরাধের এইসব বিচিত্র কাহিনির মধ্যে আধুনিক
সময়ের পাশাপাশি প্রচুর অতীত ইতিহাসও উঁকি মারে। আছে মনস্তাত্বিক
বিশ্লেষণের বহুমাত্রিক কাহিনি। ধর্মীয় ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড তো আছেই।
ভারতীয় দর্শক এখন এই সব সিরিজের কল্যাণে দারুন আকর্ষণীয় সব কাহিনি,
সঙ্গে সারা বিশ্বের প্রথমসারির অভিনেতাদের কাজ দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে।
কোনও কোনও সিরিজ আবার একাধিক সিজন ধরে দর্শককে একেবারে নেশাবন্দি
করে রাখে। এর মধ্যে সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি সিরিজও আছে। সব মিলিয়ে
দর্শক ধরে রাখার ক্ষেত্রে ক্রাইম থ্রিলারের আকর্ষণ অনস্বীকার্য। এত সবের
মধ্যে মাত্র ৭ পর্বের এই মিনি সিরিজ একেবারে ভিন্ন স্বাদে মন কেড়ে নিয়েছে
তামাম বিশ্বের থ্রিলারপ্রেমী দর্শকের। যার মুখ্য কৃতিত্ব অবশ্যই পাবেন কেট
উইন্সলেট।
Comentários